ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-১১-১২ ১৮:০৬:২০
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বুধবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, গণভোটের বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে সাক্ষাতে বললেন, “গণভোট আগে হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা এখন নেই, সময় নেই। তাছাড়া প্রয়োজনও নেই। কারণ একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে যদি আমরা একটা ছোট্ট ব্যালটে এই গণসম্মতিটা নিতে পারি, সেটাই হবে সবচাইতে যৌক্তিক, প্রাসঙ্গিক, গ্রহণযোগ্য এবং অতিরিক্ত ব্যয় হবে না।”
সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, “নোট অব ডিসেন্ট ছাড়া গণভোট আয়োজন করার কোনো বিষয়ই ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে তা নিয়ে জাতীয় সনদ হবে এবং পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সনদ বাস্তবায়ন করবে- এই বক্তব্য থেকে প্রধান উপদেষ্টা সরে যেতে পারেন না।”
তিনি বলেন, “এখানে ক্ল্যাশ অব ইন্টারেস্ট আছে। এ সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে সহযোগিতায় থাকব, ভোটে অংশগ্রহণ করব, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করব। কিন্তু সেই সরকারের প্রধান হিসেবে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে যে সুপারিশগুলো সরকারের কাছে দেওয়া হলো, সেখানে অনেকটা আমি বলব যে জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার থেকে বহুদূরে সরে গিয়েছেন।”
বিএনপির এ নেতা বলেন, “আমরা আশা করি এমন কোনো পদক্ষেপ সরকার নেবে না, যার মধ্য দিয়ে জাতিতে বিভক্তি সৃষ্টি হবে, অনৈক্য সৃষ্টি হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ‘নিরপেক্ষ’ আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
‘আলোচনার শেষ পর্যায়ে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার দু’একদিন আগে প্রধান উপদেষ্টা সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বসলেন। আমরা সেখানে প্রস্তাব করেছি যে একটা ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হোক এবং সেই সনদের বাস্তবায়নের জন্য সবাই আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হব’-উল্লেখ করেন সালাউদ্দিন আহমদ।
তিনি আরও বলেন, “সেই হিসেবে সনদ প্রণীত হয়েছে এবং সেই সনদে প্রায় ৮৪টি দফা ছিল। সেই ৮৪টি দফার বিভিন্ন দফায়, সব দফায় নয়, আমাদের এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট ছিল। এই নোট অব ডিসেন্ট প্রথাগত নোট অব ডিসেন্ট নয়। সেই নোট অব ডিসেন্টে লেখা আছে যে, এই দফাগুলো যে রাজনৈতিক দল অথবা জোট যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেটা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকাশ করে যদি জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তারা সেই মতে বাস্তবায়ন করতে পারবে।”
বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনীতিতে এ সমস্ত বিষয়ে শেষ কথা তো বলা যায় না। তবে এখনো পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, এর বাইরে যারা গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ছিল, কিছু ইসলামিক দলসহ আমরা আরও কিছু দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে চাই।
এনসিপির সঙ্গে আলোচনার খবর অস্বীকার করলেও সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে চান না সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এনসিপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হব কি হব না বা তারা আমাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ইলেকশন করবে কি করবে না, সেটার কোনো প্রস্তাব তাদের পক্ষ থেকেও আসেনি আর আমাদের পক্ষ থেকেও যায়নি। তবে একদম সেই সমঝোতা বা সেই জোট হবে না- এটাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেজন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।
‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকবে না, ওই কারণে আগামী নির্বাচন অবৈধ হবে বা অংশগ্রহণমূলক হবে না- এ ধারণার সঙ্গে আমরা একমত নই’-যোগ করেন বিএনপির এ নেতা।