ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-০৯-০১ ০২:২০:২২
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হাটহাজারী এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা চরমে উঠেছে। রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় পুনরায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিকেল ৩টা থেকে পরবর্তী দিন বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। এ সময়ে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ, অস্ত্র বহন বা পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাত থেকে টানা উত্তেজনার মধ্যে রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি জানান, স্থানীয়দের হামলায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর আবারও হামলার অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসসংলগ্ন এলাকায় গেলে স্থানীয়রা লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর মোহাম্মদ তানভীর হায়দার আরিফসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু স্থানীয়রা আলোচনায় রাজি না হয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্যে লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় প্রো-ভিসি অসুস্থ হয়ে পড়লে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে উদ্ধার করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্থানীয়রা সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণও ঘটিয়েছে। তবে এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। তবে তিনি জানিয়েছেন, নিয়মিত ক্লাস চলবে এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য শাটল ট্রেন নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী চলবে।
এর আগে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্তও দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়, যাতে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছিল।