ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৩-০৮-১৮ ১৬:১২:৫৬
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের উপস্থিতিতে জামালপুর-শেরপুর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরাকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। তবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন দলীয় কার্যালয় বা তার সামনে এ ধরণের কোন ঘটনাই ঘটে নাই।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সংরক্ষিত মহিলা এমপি বক্তব্যকালে প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের উদ্দেশ্যে বলেন, দলীয় কর্মসূচিতে আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয় না। আমাকে কেনো দাওয়াত দেওয়া হয় না বলতেই আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার তেড়ে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের এক পর্যায়ে গায়ে হাত তোলেন।
মহিলা এমপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, তোকে দাওয়াত দিতে হবে কেন ? এ সময় আনোয়ার হোসেনকে নিবৃত না করে টেবিল চাপড়িয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মহিলা এমপি হোসনে আরাকে ধমক দিয়ে চুপ থাকতে বলেন। পরে মহিলা এমপি হোসনে আরা অপমান সইতে না পেয়ে আওয়ামী লীগ অফিস ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা তাৎক্ষণিক রাত ১০টায় তার নিজ বাসভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন, ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সারা দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা ঘটনার প্রতিবাদে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আমি উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের আসনটি খালি দেখতে পাই এবং তার সম্মানে আমি দাঁড়িয়ে থাকি। পরে তিনি সভাস্থলে আসলে আমি তাকে বসতে দিয়ে আমার আসনে বসি এবং সবিনয়ে জানতে চাই, যে কোনো সভা সমাবেশের বিষয়ে আমাকে কেনো জানানো হয় না।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক বহিস্কৃত নেতা আনোয়ারুল ইসলাম আমাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে সে আমার হাতে থাপ্পড় মারে।
হোসনে আরা এমপি অভিযোগ করে বলেন, ইচ্ছা থাকলে প্রতিমন্ত্রী মহোদয় বিষয়টি তাৎক্ষণিক সুরাহা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটি করেননি। বরং আমাকেই শাসিয়েছেন।
উপজেলা যুব লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম (ভিপি বাবু) বলেন, দলের সভাপতি ও প্রতিমন্ত্রীর সামনে একজন দলীয় নেতা হয়ে মাননীয় মহিলা এমপির উপর হামলা করবে এটা অত্যান্ত ন্যাক্কার জনক ঘটনা। প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ইচ্ছা করলে বিষয়টি ওই সময়ই সমাধান করতে পারতেন।
দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলামের সাথে মহিলা এমপির কোন কথা কাটাটি হয়নি। বরং মহিলা এমপি মহোদয়ই তার নিকট জবাব চেয়েছেন। কেনো তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। উত্তরে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বলেছেন এ বিষয়ে আপনি আমাকে বলেন কেন আমি তো আর দপ্তর সম্পাদক নই। একটা কি তার অপরাধ?
সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, এটা শোকের মাস আগস্ট। এ মাসের সকল কর্মসুচি দলীয় ফেসবুক গ্রুপ ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সকল নেতাকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহিলা এমপি মহোদয় যে অভিযোগ করেছেন এখানে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলামের কোন খারাপ ভূমিকা ছিলো না।
অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মাননীয় মহিলা এমপি হোসনে আরা মহোদয়কে কোন ধরনের গালিগালাজ বা গায়ে হাত তোলার কোন প্রশ্নই উঠে না। এসব অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা দাবি করেন তিনি।
এ ব্যপারে ইসলামপুরস্থ জেলা পরিষদ ডাকবাংলায় অবস্থানরত ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় মহিলা এমপি হোসনে আরার অভিযুক্তটি সত্য নয়। কারণ আমি তাকে আমার পাশের চেয়ারে বসিয়ে সভার কার্যক্রম সমাপ্ত করেছি। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম মাননীয় এমপি হোসেনে আরার সাথে কোনো রকমের খারাপ আচরণ করেছে বলে আমি দেখিনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ রয়েছে ভিডিও ফুটে দেখলেই বিষয়টি খোলসা হবে। তিনি বলেন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এমপি হোসনে আরা সভা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন ভাবে কুৎসা রটাচ্ছেন। এতে আওয়ামী লীগ ও তার নিজেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। যা কাম্য নয়। প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সরেজমিন প্রতিবেদন করার আহ্বান জানান।