ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-১১-১৪ ০০:৫১:০৩
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে গেজেট প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়, সুদীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায় প্রকাশ পায়। এই গণঅভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট তৎকালীন সরকারের পতন ঘটে এবং ৮ আগস্ট গঠিত হয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি লাভ করে।
গেজেটে আরও বলা হয়, সুশাসন, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধে অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করে। এসব কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিক দফা সংলাপের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রণয়ন করে।
রাষ্ট্রপতির জারিকৃত আদেশে বলা হয়, এই সনদের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অনুমোদন অপরিহার্য। সেই উদ্দেশ্যে গণভোট আয়োজন, সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ জারি করেছেন।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই আদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বিকেলে রাষ্ট্রপতির কাছে আদেশটি পাঠানো হয়, এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরই তা কার্যকর হয়।
দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। চারটি বিষয়ে একটিমাত্র প্রশ্নে জনগণ ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটের মাধ্যমে মতামত দেবেন।” তিনি আরও জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। গণভোটও একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে, যাতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও উৎসবমুখর হয়।
রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ও মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করল। এখন শুরু হবে গণভোটের প্রস্তুতি এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া।