ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-১০-২১ ১৮:৩১:২১
জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দেশটির পার্লামেন্টের দুই কক্ষে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ৪৬৫ আসনের নিম্নকক্ষে ২৩৭ ভোট এবং ২৪৮ আসনের উচ্চকক্ষে ১২৫ ভোট পান ৬৪ বছর বয়সী এই রক্ষণশীল নেতা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এর মধ্য দিয়ে জাপানের দীর্ঘদিনের পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন তাকাইচি। সর্বশেষ নির্বাচনে দলের ভরাডুবির দায় নিয়ে পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন ইশিবা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাপানের ১০৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা তাকাইচির। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত তাকাইচি ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ মার্গারেট থ্যাচারের ভক্ত হিসেবেও পরিচিত।
তাকাইচি নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে (এলডিপি), যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে প্রায় অবিচ্ছিন্নভাবে জাপানের ক্ষমতায় রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এলডিপি দুর্নীতি ও তহবিল কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত, ফলে দলের জনপ্রিয়তা অনেক কমে গেছে। সোমবার ডানপন্থি দল জাপান ইনোভেশন পার্টির সঙ্গে জোট গঠন করে এলডিপি, যা তাকাইচির ক্ষমতায় আসার পথ সুগম করে দেয়।
জাপানের ‘আয়রন লেডি’ হিসেবে পরিচিত তাকাইচির নেতৃত্বে দেশটির রক্ষণশীল রাজনীতি আরও দৃঢ় হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনে তিনি শিনজো অ্যাবের “অ্যাবেনোমিকস” নীতির অনুসারী। এই নীতিতে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা সরকারের ঋণনির্ভর ব্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ জাপানের মোট সরকারি ঋণ দেশের বার্ষিক জিডিপির চেয়ে অনেক বেশি।
আইচি গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক তাদাশি মোরি বলেন, “তাকাইচির কাছে ক্ষমতা থাকলেও কার্যকরভাবে সরকার পরিচালনার জন্য বিরোধী দলের আরও সমর্থন প্রয়োজন হবে। এলডিপি ও তাদের শরীক দল কোনো কক্ষেই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়।” তিনি আরও বলেন, “যদি তাকাইচি অ্যাবেনোমিকস পুনরুজ্জীবিত করতে চান, তবে তা বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির বাস্তবতায় কঠিন হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, তাকাইচির জয় জাপানি নারীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তবে নারীর নেতৃত্বে পরিবর্তনের আশায় যারা ছিলেন, তারা এখন অপেক্ষায় দেখবেন এই প্রধানমন্ত্রী সত্যিই সেই পরিবর্তন আনতে পারেন কি না।