ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-০৮-২৭ ১৭:২৪:৪৪
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নতুন নতুন দাবি তোলা হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের কাছে অচেনা ও বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “আমরা সংস্কারের পক্ষে সবসময় ছিলাম। বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও সহযোগিতা করেছি, কখনো কোনো বড় দাবি তুলে সরকারকে বিব্রত করিনি।”
তিনি দাবি করেন, নির্বাচন নিয়ে যে সব নতুন শর্ত বা প্রস্তাব তোলা হচ্ছে, তার অনেকগুলোই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত। উদাহরণ হিসেবে তিনি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা (পিআর পদ্ধতি)–র কথা উল্লেখ করে বলেন, “এটা সাধারণ মানুষের কাছে জটিল বিষয়। অথচ এ নিয়েই এখন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে আজকের মতো জটিলতা তৈরি হতো না। তখন একটি নির্বাচিত সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে পারত। অথচ ইচ্ছে করেই নানা অজুহাত সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের ভেতরের একটি মহল সচেতনভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে থাকা শক্তিগুলোকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, “এস আলম গ্রুপ ভারতে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় শেখ হাসিনাকে আড়াই হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। সেই টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র চলছে।”
দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, “প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এখন দুর্নীতির কবলে। আগে যেখানে এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো, এখন দিতে হয় পাঁচ লাখ। এভাবে নৈতিক অবক্ষয় রাষ্ট্র ও সমাজকে ধ্বংস করছে।”
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ফখরুল বলেন, “আমরা দেখেছি কিভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করা হয়েছে, মা-বোনদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। যারা তখন পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করেছিল, আজ তারাই বড় বড় কথা বলছে। তাই আমাদের এখন আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম। সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু।
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, “ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করুন। জটিলতা তৈরি না করে সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করুন। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এটাই একমাত্র পথ।”