ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-০৭-০৪ ১৭:৪৪:২০
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে রয়েছে ফজর আলীর সাথে তার ভাইয়ে বিরোধ। ভিডিও ছড়ানোর ঘটনার মূল হোতা তারই আপন ছোটো ভাই শাহ পরান। এই নারীকে উত্ত্যক্ত করার জেরে সালিসে শাহ পরানকে চড় মেরেছিলেন ফজর আলী। এ কারণে ফজর আলীকে বিপদে ফেলে প্রতিশোধ নিতেই পুরো ঘটনা সাজিয়েছিলেন তিনি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রিফিংয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন দাবি করেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ছোট ভাই মব সৃষ্টি করে ভুক্তভোগী ও ধর্ষককে নির্যাতন, শ্লীলতাহানী করেন ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘বড় ভাই ফজর আলী ও ছোট ভাই শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। ঘটনার দুই মাস আগে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর গ্রাম্য শালিসে জনসম্মুখে বড় ভাই ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চড় মারেন। পরবর্তীতে শাহ পরান তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘শালিসের কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ধার নেন। গত ২৬ জুন রাতে ভুক্তভোগীর বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে ফজর আলী ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করেন। এর ২০ মিনিট পর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভুক্তভোগীর বাড়ির আশপাশে অবস্থান করা শাহ পরান ও একই গ্রামের আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান ও অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি দরজা ভেঙে ভুক্তভোগীর ঘরে ঢুকে ফজর আলীকে মারধর এবং ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানী ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে পরবর্তীতে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।’
র্যাব জানিয়েছে, শাহ পরান ভিডিও ধারণ এবং মব সৃষ্টির জন্য ইমো অ্যাপে মেসেজ দিয়ে অন্যদের ডেকে আনেন। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন অভিযুক্তরা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেলে কুমিল্লার বুড়িচং এলাকা থেকে অভিযুক্ত শাহ পরানকে গ্রেফতার করে র্যাব।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে বসত ঘরের দরজা ভেঙে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ধর্ষক ও ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।