ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৪-০৩-০১ ০৮:৪৮:৪৫




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৪-০৩-০১ ০৮:৪৮:৪৫




  • জাতীয়
  • বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে ৪৪ জনের মৃত্যু.

বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে ৪৪ জনের মৃত্যু

kzqghvva

বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে ৪৪ জনের মৃত্যু

kzqghvva


  

রাজধানীর বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন রাত ২টার দিকে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। অচেতন অবস্থায় ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪২ জনকে।


বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে বারোটা থেকে একটার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে থাকে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স। সেগুলোতে থাকা মানুষের দেহের বেশিরভাগই নিথর। দেহগুলোকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেলের ৭ নম্বর অবজারভেশন ওয়ার্ডে। সেখান থেকে পাঠানো হতে থাকে মর্গে। 

 হাসপাতাল জুড়ে স্বজনদের কান্না, ভিড় সামলাতে বাঁশির শব্দ আর মাঝে মাঝে আসতে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ। একেকটা অ্যাম্বুলেন্স আসার পর শুরু হচ্ছে হাসপাতাল কর্মীদের ছোটাছুটি।


জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় অন্তত ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়েছে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আরও ৪২ জনকে। মারা গেছেন ৪৪ জন। ঢামেক হাসপাতালে ৩০, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ৩টি মরদেহ।


রাত একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহবাগ থানার এস আই মহিদুল ইসলাম জানান, রাত একটা পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেলে আসা ৪৪ জনের লাশ গুনেছেন। নিহত ব্যক্তিদের ছবি তুলে রাখছেন তিনি। ঘটনাস্থলে আরো কতজন আছে তারা তারা এখনো জানেন না।


ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুহিত উদ্দিন বলেন, বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। এখনো সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।


রাত সোয়া একটার দিকে পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনেক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের বিষয়ে শঙ্কিত। তাদের চিকিৎসা ও জীবন রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। সব মিলিয়ে ভবনটি থেকে ৭৫ জনকে উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।


রাত সোয়া একটার দিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে ফায়ারের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়া জেনারেল মঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা তিনজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি এবং অচেতন অবস্থায় ৪২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মহিলা ২১ জন, চার জন শিশু, বাকি ছিল পুরুষ।


তিনি বলেন, দ্বিতীয় তলা ছাড়া প্রতিটি তলাতে এমনকি সিঁড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল। এ জন্য এটা বিপজ্জনক।


আগুনের কারণ কী- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ধারণা চুলা থেকে অথবা গ্যাস লিক থেকে আগুন হতে পারে।


এই ভবনে কেবল একটি সিঁড়ি ছিল বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের প্রধান।


এর আগে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা ভেতরে তল্লাশি চালাচ্ছি। আটকেপড়াদের জীবিত উদ্ধারে যতটুকু করা সম্ভব আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি। বাকি পরিস্থিতি এখনো বলার সময় হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তারপরও ভেতরে ধোঁয়া আছে।


ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভবনের ভেতর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভেতরে বডি ব্যাগ নিয়ে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। নিচে অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হয়।


তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ভেতরে প্রচণ্ড ধোঁয়া রয়েছে। কয়েকজনকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের মৃত্যু হয়েছে নাকি অচেতন হয়ে পড়ে আছে, তা নিশ্চিত নয়। মৃতদেহ পাওয়া গেলে তা উদ্ধারের পর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।


অপর এক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে।


দীর্ঘ দুই ঘন্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে ভয়াবহ এ আগুন। তবে, পুরোপুরি নির্বাপণে সময় লাগছে। পাশাপাশি চলছে ভবনে আটকেপড়াদের উদ্ধার অভিযান।


আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা এবং উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পুলিশ, আনসার ও বিজিবির সদস্যরা।


ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিম।


উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট’ ভবনে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।









মন্তব্য