ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৪-০১-২৯ ২১:১৩:৫৬




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৪-০১-২৯ ২১:১৩:৫৬




  • রাজনীতি
  • সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ না করে মন্ত্রীরা ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত: রিজভী.

সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ না করে মন্ত্রীরা ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত: রিজভী

সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ না করে মন্ত্রীরা ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত: রিজভী



সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যসহ বাংলাদেশিদের নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ না করে মন্ত্রীরা ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গতকাল দহগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশি রাফিউল ইসলাম টুকলুকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এর ৬ দিন আগে গত ২২ জানুয়ারি বিজিবি সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে বিনা উস্কানিতে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এই হত্যার পর বিএসএফের পক্ষ থেকে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় তা অভিসন্ধিপ্রসূত, উপহাসমূলক এবং নির্জলা মিথ্যাচার।


সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।



রুহুল কবির রিজভী বলেন, সীমান্তে অব্যাহত এই নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘আওয়ামী ডামি সরকার’ এই অবধি প্রতিবাদ তো দূরের কথা টু শব্দ পর্যন্ত করার সাহস দেখাতে পারেনি। উল্টো ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মন্ত্রীরা।


রিজভী বলেন, নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন- ‘এই বিষয়ে আমরা এখন কথা বলতে চাই না’। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন—‘এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা! এ নিয়ে আলোচনার কি আছে’? অন্য এক মন্ত্রী বলেছেন, ‘নো কমেন্টস’।



তিনি বলেন, বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে হত্যাকে কীভাবে একজন মন্ত্রী বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেন? সীমান্তে ভারত দখল, হত্যাযজ্ঞ চালালেও আমরা কিচ্ছু বলতে পারবো না। কয়েক বছর আগে এক আওয়ামী মন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না! এই হচ্ছে তাবেদার ‘আওয়ামী ডামি’ সরকারের নতজানু নীতি। ক্ষমতার জন্য এরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে কুণ্ঠিত নন।


বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে-২০২৩ সালে বিএসএফ ৩০ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। প্রাণহানি ছাড়াও ৩১ জন বাংলাদেশিকে মারাত্মক শারীরিক নির্যাতন করে পঙ্গু করে দিয়েছে বিএসএফ। কেবল সীমান্তে পাখির মতো মানুষকে গুলি করে হত্যা নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে লুটপাট, হামলা, ভাংচুর, এমনকি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রতিবাদ করে না শেখ হাসিনার নতজানু সরকার।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার জন্য একান্ত বাধ্যগতভাবে গোলামি করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটাই কি স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার নমুনা? ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত রয়েছে। আর সমুদ্র সীমান্ত শ্রীলংকার সঙ্গে। এই সবগুলো দেশের সীমান্তেই ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ মোতায়েন আছে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য ৫টি দেশের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিরীহ কোনো লোক নিহত হওয়ার কোনো খবর খুব একটা চোখে পড়ে না।


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তিনি (ওবায়দুল কাদের) এক মুখে দুই কথা বলেন। তার এই দ্বৈততার মধ্যেই প্রকৃত সত্যটি বের হয়ে আসে। তিনি আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে বলেছেন—‘আমাদের সরকারকে কোন বিদেশি শক্তি বসায়নি’। একই সভায় তার বক্তব্যের আর এক জায়গায় তিনি বলেছেন- ‘নির্বাচনে ভারত জোরালোভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, এটি জরুরি ছিল’। আবার তিনি আরেকটি সভায় বলেছেন- ‘নির্বাচনের সময় ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল, স্বীকার করতেই হবে’। আবার তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন- ‘শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সব অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙেছে’।


ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়—ভারতের সহযোগিতায় বিনা ভোটে তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতা আবারও দখল করেছে। ভারতের প্রতিভু হয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এক সর্বনাশা কতৃর্পক্ষে পরিণত হয়েছেন। জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্রের দৌরাত্মে এক উদ্ভট, দৃষ্টান্তহীন এবং নিষ্ঠুর খামখেয়ালি রাজার মতো ভারতকে খুশি করতেই ব্যস্ত রয়েছেন, বলেন বিএনপির এ নেতা।


তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতের গোলামি করলেও এ দেশের মানুষ ভারতের গোলামির জিঞ্জির পরিধান করবে না। ঐতিহাসিকভাবেই যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাহসী জনগণের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধের বীরত্বগাঁথা ঐতিহ্য রয়েছে। ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তবে আমাদের আপত্তি ভারতের শাসকদের পলিসি, নীতি নিয়ে।


তাই দল-মত নির্বিশেষে ভারতীয় এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।









মন্তব্য