ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-১১-২৪ ১২:২২:৪৮




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-১১-২৪ ১২:২২:৪৮




  • রাজনীতি
  • বিরোধী কর্মীদের বাসায় গিয়ে পুলিশ-গোয়েন্দা পরিচয়ে চাঁদাবাজি.

সঙ্গে আছে হেলমেট বাহিনীও

বিরোধী কর্মীদের বাসায় গিয়ে পুলিশ-গোয়েন্দা পরিচয়ে চাঁদাবাজি

বিরোধী কর্মীদের বাসায় গিয়ে পুলিশ-গোয়েন্দা পরিচয়ে চাঁদাবাজি


আসন্ন নির্বাচন ঘিরে নির্বাচনকেন্দ্রিক অপরাধও বাড়ছে। সম্প্রতি পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে গিয়ে গ্রেফতারের কথা বলে চাঁদাবাজি হচ্ছে। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশেই এ ধরনের অপরাধ ছড়িয়ে পড়েছে। সবক্ষেত্রেই যে অপরাধীরা এটা করছে, এমনটিও নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যও এসব অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। যদিও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার পরও থামছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে হেলমেট বাহিনী। হেলমেট পরে অনেকেই এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

গত বুধবার রাজধানীর কলাবাগানে একজন বিএনপি নেতার বাসায় ডিবি পরিচয়ে গ্রেফতারের জন্য গিয়ে ১ লাখ টাকা নিয়ে এসেছে। ঐ বিএনপি নেতা কিডনি রোগী। তিনি অনেক দিন ধরে অসুস্থ। অথচ তার বাসায় গিয়ে ডিবি পরিচয়ে গ্রেফতারের কথা বলে। গ্রেফতার এড়াতে ৫ লাখ টাকা দাবি করে ঐ দলটি। এত টাকা কীভাবে দেবে? জানতে চাইলে তার স্ত্রীকে বলে, টাকা না থাকলে গহনা দিয়ে দেন। পরে তিনি ১ লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাদের হাতে দেওয়ার পর তারা বাড়ির সিসিটিভির সব ফুটেজ নিয়ে চলে যায়। 

ডিবির কোনো টিম কি ঐ বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারের জন্য গিয়েছিল? জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। খোঁজখবর নিচ্ছেন। তবে তিনি বলেন, ডিবির কেউ গেলে তাদের একটা নির্দিষ্ট জ্যাকেট আছে। সেখানে কিউআর কোড আছে। যে কেউ ইচ্ছে করলেই সেই কোড স্ক্যান করে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেন। পোশাক ছাড়া কাউকে অভিযানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কোথাও অভিযানকারী দলের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ হলে তারা ৯৯৯-এ ফোন করেও সহযোগিতা চাইতে পারেন।

শুধু ঢাকা নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন অভিযোগ আসছে। গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল হত্যার ঘটনায়ও মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির কয়েক শ নেতাকে আসামি করা হয়েছে। এর বাইরেও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিপুলসংখ্যক মামলা রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান চলছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের এই প্রক্রিয়ার মধ্যে এক ধরনের অপরাধী চক্র সুযোগ নিচ্ছে বলে মনে করেন অনেকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু তাদের কারণে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যদি বাহিনীর কোনো সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশিদ আলম বলেন, র্যাব পোশাক ছাড়া র্যাব কাউকে গ্রেফতারে অভিযানে যায় না। কেউ যদি র্যাবের নাম ব্যবহার করে তারা স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে পারে। র্যাব অভিযানে গেলে নিজস্ব গাড়িতে এবং একাধিক ফোর্স নিয়েই অভিযানে যায়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই র্যাব অভিযান চালায়।

গত ৬ নভেম্বর নাটোরে মুনসুর রহমান নামের এক মাছ চাষির কাছ থেকে পুলিশ পরিচয়ে ৪৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তিন ব্যক্তি। চাঁদা না দিলে মারধর, গ্রেফতার ও পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের হুমকিও দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় গুরুদাসপুর থানায় চাঁদাবাজির মামলা হয়। একইভাবে নওগাঁর পত্নীতলায় গত অক্টোবরে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতেই ধরা পড়ে দুই যুবক। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সেই সুযোগই নিচ্ছে অপরাধী চক্র। আবার স্থানীয় কিছু পুলিশ সদস্যও এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর আগেও কয়েক জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, পুলিশের সঙ্গে রাস্তায় থাকা হেলমেট বাহিনীও এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এরা এখন সাধারণ মানুষের কাছে আতঙ্ক হয়ে পড়েছে।









মন্তব্য