ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-০৯-০৪ ১৭:২৬:০৪




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-০৯-০৪ ১৭:২৬:০৪




  • জাতীয়
  • পোশাক রফতানির আড়ালে ৩০০ কোটি টাকা পাচার: কাস্টমস গোয়েন্দা.

পোশাক রফতানির আড়ালে ৩০০ কোটি টাকা পাচার: কাস্টমস গোয়েন্দা

পোশাক রফতানির আড়ালে ৩০০ কোটি টাকা পাচার: কাস্টমস গোয়েন্দা


পোশাক রফতানির আড়ালে দেশের ১০টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা। এরমধ্যে ঢাকার সাতটি, গাজীপুরের দুটি ও সাভারের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব প্রতিষ্ঠান জালিয়াতির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, সৌদি আরব ও কাতারসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি দেখিয়ে এই বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার করেছে।

অভিযুক্ত ১০ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো, প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড (আশুলিয়া, সাভার); ফ্যাশন ট্রেড (গুলশান, ঢাকা); এমডিএস ফ্যাশন (উত্তরা, ঢাকা); হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর), থ্রি-স্টার ট্রেডিং (বনানী, ঢাকা); ফরচুন ফ্যাশন (মিরপুর, ঢাকা); অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড (কচুক্ষেত, ঢাকা); পিক্সি নিট ওয়্যারস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর); স্টাইলাইজ বিডি লিমিটেড (শাহবাগ, ঢাকা) এবং ইডেন স্টাইল টেক্স (খিলক্ষেত, ঢাকা)।

কাস্টমস গোয়েন্দা জানিয়েছে, অভিনব কায়দায় রফতানি জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে, কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসিত হচ্ছে না—এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব পণ্য রফতানির করে কোনও অর্থ দেশে প্রত্যাবাসিত না হয়ে বিদেশে পাচার হয়েছে। তদন্তকালে দেখা গেছে, এই ১০ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বিগত সময়ে ১ হাজার ২৩৪টি চালানে এমন জালিয়াতি করেছে, যার প্রমাণও পাওয়া গেছে। রফতানি সম্পন্ন হওয়ার এসব চালানের বিপরীতে পণ্যের পরিমাণ ৯ হাজার ১২১ মেট্রিক টন; যার বিপরীতে প্রত্যাবাসনযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভাব্য পরিমাণ ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৮ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০০ কোটি টাকা প্রায়)। 

প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট দলিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, পোলো শার্ট প্রভৃতি পণ্য রফতানি করে। আর এর আড়ালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রফতানি দেখিয়ে অর্থপাচার করেছে।

প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড (আশুলিয়া, সাভার)

প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে ৩৮৩টি এবং ২০২০ সালে আটটিসহ মোট ৩৯১টি রফতানি চালানের মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব পণ্য চালানে মোট ৩ হাজার ৮০ মেট্রিক টন টি-শার্ট, প্যান্ট, পাজামাসহ বিভিন্ন পণ্য ছিল। যা সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রফতানি করা হয়েছে। রফতানি হওয়া এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৯ মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯২ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ২৪৫ টাকা)।

ফ্যাশন ট্রেড (গুলশান, ঢাকা)

এই প্রতিষ্ঠানটির ২০২০ সালে ৭৩টি, ২০১৯ সালে ১১৬টি এবং ২০১৮ সালে ৫৭টিসহ মোট ২৪৬টি রফতানি চালানে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যেসব চালানে ১ হাজার ৭৭৯ মেট্রিক টন টি-শার্ট, প্যান্ট, টপ, পাজামাসহ বিভিন্ন রকমের পণ্য ছিল। এসব পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, সুদান ও মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রফতানি করা হয়েছে। পণ্যগুলোর মূল্য প্রায় ৮০ লাখ ৫১ হাজার ৬৪০ মার্কিন ডলার (৬৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ২৩৬ টাকা প্রায়)।

এম ডি এস ফ্যাশন (উত্তরা, ঢাকা)

এই প্রতিষ্ঠানের ২০২০ সালে ১৮২টি রফতানি চালানে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। পণ্য চালানগুলোতে ১ হাজার ৩৭৬ মেট্রিক টন টি-শার্ট ছিল; যার অধিকাংশই সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, কাতার ও ফিলিপাইনে রফতানি করা হয়েছে। রফতানি এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ৫১ লাখ ৮২ হাজার ৫৮৬ মার্কিন ডলার (৪৪ কোটি ১ হাজার ৫৫১ টাকা প্রায়)।

হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর)

২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে, তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটির ১৫৬টি রফতানি চালানে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব চালানে ১ হাজার ১৬১ মেট্রিক টন টি-শার্ট রফতানি করা হয়েছে। যার অধিকাংশেই সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, কাতার, নাইজেরিয়া, কুয়েত ও মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রফতানি করা হয়েছে। আলোচ্য চালানগুলোতে রফতানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৪৭ লাখ ৮৯ হাজার ৬০৬ মার্কিন ডলার (৪০ কোটি ৬৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৬ হাজার টাকা প্রায়)।

থ্রি-স্টার ট্রেডিং (বনানী, ঢাকা)

২০২০ সালে ১২০টি রফতানি চালানের জালিয়াতি করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি, যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। রফতানিকৃত পণ্য চালানগুলোতে ৮১৬ মেট্রিক টন টি-শার্ট রফতানি করেছে। যার অধিকাংশই মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, কানাডা, মিসর প্রভৃতি দেশে রফতানি করা হয়েছে। চালানগুলোতে রফতানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৩০ লাখ ৫৩ হাজার ১০৮ মার্কিন ডলার (২৫ কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার ৮৬৯ টাকা প্রায়)।

ফরচুন ফ্যাশন (মিরপুর, ঢাকা)

২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ৫৯টি রফতানি চালানের জালিয়াতি করেছে এই প্রতিষ্ঠান, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। রফতানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৪৩৫ মেট্রিক টন টি-শার্ট রফতানি করেছে। এসব পণ্যের অধিকাংশই সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, মিসর ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়েছে। রফতানি হওয়া এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ১৫ লাখ ২৪ হাজার ৮১৩ মার্কিন ডলার (১২ কোটি ৯৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬২৩ টাকা প্রায়)।

অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড (কচুক্ষেত, ঢাকা)

এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ৪২টি রফতানি চালানের মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। রফতানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ১৯৫ মেট্রিক টন টি-শার্ট রফতানি করেছে। যার বেশিরভাগই সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলজিয়াম, নাইজেরিয়া, জর্জিয়া ও মালয়েশিয়াসহ প্রভৃতি দেশে রফতানি হয়েছে। রফতানি হওয়া এসব পণ্যের মূল্য ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৪৭০ ডলার (৭ কোটি ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ২০৩ টাকা প্রায়)।

পিক্সি নিট ওয়্যারস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর)

২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি ২০টি রফতানি চালানের মাধ্যমে জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। পণ্যচালানগুলোতে ১৭০ মেট্রিক টন টি-শার্ট রফতানি করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, কুয়েত, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া ও শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশেই এসব পণ্যের বেশিরভাগ পাঠানো হয়েছে। পণ্যগুলোর মূল্য প্রায় ৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৮২ মার্কিন ডলার (৫ কোটি ৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৪১ টাকা প্রায়।

স্টাইলাইজ বিডি লিমিটেড (শাহবাগ, ঢাকা)

প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ১০টি রফতানি চালানে অর্থপাচার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব চালানে ৬৬ দশমিক ৮ মেট্রিক টন পণ্য ছিল। বেশিরভাগ পণ্য গেছে ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়া, স্লোভেনিয়া ও পানামায়। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬২৯ মার্কিন ডলার (২ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৯০২ টাকা প্রায়।

ইডেন স্টাইল টেক্স (খিলক্ষেত, ঢাকা)

২০২০ সালে আটটি রফতানি চালানে জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। রফতানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৪২ মেট্রিক টন টি-শার্ট রফতানি করেছে ইডেন স্টাইল টেক্স। বেশিরভাগ পণ্যই রফতানি হয়েছে টোঙ্গা, ওমান, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশে। রফতানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮ মার্কিন ডলার (১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮১৬ টাকা প্রায়)।











মন্তব্য