ডেইলি বাংলা টাইমস: জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সরকার গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। দেশের সম্পদ লুট করে যারা হাজার কোটি টাকার মালিক, তাদের পাশে দাঁড়ায় সরকার। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ও আমলাতন্ত্রের যোগসাজোশে কিছু ব্যবসায়ী নামধারী লুটপাট করে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে। কোনো ব্যবসা নেই, কিন্তু তারা হাজার কোটি টাকা আয় করছে। লুটেরাদের এমপি-মন্ত্রীও বানানো হয়। তিনি গতকাল মঙ্গলবার তার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, যারা দেশের মানুষের সম্পদ লুট করছে, তাদের জন্যই সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করছে। দেশে লুটপাটের রাজনীতি সৃষ্টি হয়েছে। যে যত লুটপাট করতে পারবে, সে তত সম্মানিত ব্যক্তি। যে যত বড় লুটেরা, সে তত বড় দেশপ্রেমিক হিসেবে গলায় মালা নিয়ে ঘুরবে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যারা দেশের জন্য ভালো কাজ করতে চাচ্ছেন, তারা যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে যারা হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়, তাদের সুদ সরকার মাফ করে দেয়। কিন্তু কৃষকের ১০ হাজার টাকা ঋণ মওকুফ হয় না। লুটেরারা হাজার কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলে, আর কৃষকদের টাকায় সেই ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ব্যাংক লুটেরাদের শাস্তির ব্যবস্থা হয় না, রিশিডিউলের মাধ্যমে তাদের ওপরের দিকে তোলা হয়, তাদের এমপি-মন্ত্রী বানানো হয়। আবার, ১০ হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষক ঘরে ঘুমাতে পারে না। সামান্য টাকার জন্য পুলিশ কৃষকদের হয়রানি করছে। কৃষকদের বাঁচাতে যতটা ভর্তুকি লাগে, তা সরকারকে দিতে হবে।

জি এম কাদের আরো বলেন, কারো দয়া-দাক্ষিণ্যে নয়, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই। সাধারণ মানুষই দেশের মালিক। তারাই নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবে কারা কীভাবে দেশ চালাবে। যদি ঠিক মতো দেশ না চলে, তাহলে মানুষ আবার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন ও সরকার পরিবর্তনই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা। তিনি বলেন, যেহেতু ডলার সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তাই সরকার সব জমি কৃষি কাজের আওতায় আনতে উপদেশ দিচ্ছে। কিন্তু, যারা কৃষিকাজ করে দেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখছেন, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

সভায় জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট আর দলবাজির কারণে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ-বিএনপির হাত থেকে মুক্তি চায়। জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এ বি এম লিয়াকত হোসেন চাকলাদারের সঞ্চালনায় কৃষক পার্টির নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেখ আলমগীর হোসেন, শেখ হুমায়ুন কবির শাওন, কাজী জামাল উদ্দিন, রমজান আলী ভুঁইয়া, আব্দুল কুদ্দুস শাওন, আবুল কাশেম, মইনুদ্দিন খান, মনির উদ্দিন, এনামুল হক বেলাল, প্রকৌশলী এম মুনিম চৌধুরী বুলবুল প্রমুখ।