ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-০৯-০১ ১২:২২:৪৬
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)'র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ । ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর এই দিনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে দলটির যাত্রা শুরু করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় আড়াই যুগে দলটি একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেছে, আবার দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থেকেও আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় থেকেছে।
প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান। এরপর নানা রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নেতৃত্বে আসেন তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। তাঁর নেতৃত্বেই দলটি ৯০’র দশকের গণআন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়।
তবে ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে বিএনপির রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আসে। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান, যিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। অপরদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্নীতির মামলায় কারাভোগ ও পরবর্তী অসুস্থতার কারণে রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। ফলে প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপিকে টিকে থাকার লড়াই চালাতে হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষার অঙ্গীকারে অটল। তিনি দাবি করেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। একইসঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ৮০’র দশকে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন এবং ৯০’র গণআন্দোলনের সময় দলের আপোষহীন অবস্থানের কথা স্মরণ করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও পৃথক এক বাণীতে দলের ইতিহাস, আদর্শ এবং জাতীয় রাজনীতিতে অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতেই বিএনপি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে আরও সুসংহত করার আহ্বান জানান।
দলীয় ঘোষণায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানীসহ সারাদেশে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। বিএনপি মনে করে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করলেই কেবল প্রকৃত গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
চার দশকের বেশি সময়ের পথচলায় বিএনপি একদিকে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, অন্যদিকে দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসও গড়েছে। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলটির মূল অঙ্গীকার—গণতন্ত্রের চর্চা ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।