ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৫-০৮-২১ ১৭:৪০:৩৪
জুলাই–আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের ওপর ভর করে হাইকোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন। আদালত প্রতিবেদনটিকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগামী তিন মাসের মধ্যে ‘জুলাই রেভুলেশন-২০২৪’ নামে গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলাটিকে চলমান মামলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ জানান, আদালত রুলে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন জুলাই–আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট–ফাইন্ডিং প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না। একই সঙ্গে এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জ্ঞান আহরণ ও গবেষণার স্বার্থে সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছিল।
রায়ের নির্ধারিত তারিখ ছিল ৩ আগস্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষ সময় চাইলে রায় ঘোষণায় বিলম্ব ঘটে। শেষ পর্যন্ত ২১ আগস্ট আদালত রায় দেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ হাইকোর্টে রিট করেন। তিনি ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রাখা এবং জুলাই–আগস্ট গণহত্যায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আদালতের নির্দেশনা চান। প্রাথমিক শুনানি শেষে ১৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দেন, যেখানে দেশের নিরীহ মানুষ হত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিচারের জন্য কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে। গুরুতর আহত ও বহু বিক্ষোভকারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে তৈরি ওই প্রতিবেদন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। পরে রিট আবেদনকারী চলতি মাসে মামলার সম্পূরক আবেদনে প্রতিবেদনটি যুক্ত করেন।
হাইকোর্টের এই নির্দেশনায় ‘জুলাই রেভুলেশন’ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাস নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সংগ্রামের এক অনন্য স্বাক্ষর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।