ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-২৪ ২৩:৫১:৪০
'শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে মামলা করবেন শহীদ জাবির-এর বাবা'
ঢাকা (উত্তরা) : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ২০২৪-এর গণআন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে নিহত ৬ বছর বয়সী শিশু শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক জনাব তারেক রহমান এবং তাঁর সহধর্মিনী ডাঃ জুবাইদা রহমান।
আজ শুক্রবার বিকেলে (আগস্ট ২৩, ২০২৪) উত্তরায় শিশু শহীদ জাবির-এর বাসভবনে যান একটি প্রতিনিধি দল। জাবির-এর বাবা কবির হোসেন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি জনাব তারেক রহমান ও ডাঃ জুবাইদা রহমানের পক্ষ থেকে সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন প্রতিনিধি দলে থাকা ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন।
এসময় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত শিশু শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর বাবা কবির হোসেনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি একজন গর্বিত বাবা, আপনার সন্তানের রক্তের বিনিময়ে আবারো দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই রক্তের ঋণ আমরা শোধ করতে পারবো না কখনো। আমরা কৃতজ্ঞ যে, শিশু জাবির ইব্রাহিম-এর মতো শহীদদের জন্য দেশবাসী এখন নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।’
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ আরো বলেন, ‘জনাব তারেক রহমান ও ডাঃ জুবাইদা রহমান আপনাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তারা দোয়া করেছেন এবং আপনাদের পরিবারের পাশে সবসময় থাকবেন ইনশাআল্লাহ।’
শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর বাসভবনে উপস্থিত বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আবু সায়েম বলেন, ‘শহীদের মৃত্যু হয়না, শহীদ জাবিরেরও মৃত্যু হয়নি, বরং জাবিরের রক্তে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। এই স্বাধীনতার জন্য জাবিরসহ সকল শহীদদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানও। সেজন্য আজকে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি।’ ব্যারিস্টার আবু সায়েম আরো বলেন, ‘প্রতিটি শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াবার জন্য বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেভাবেই আমাদের কাজ চলছে। আমরা সবসময় নির্যাতিত ও শহীদ পরিবারের পাশে আছি এবং আগামীতেও পাশে থাকবো। দুঃসময়ে অথবা সুসময়ে কখনোই শহীদদের আমরা ভুলবো না।’
এছাড়া ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন বলেন, ‘আমাদেরকে পাঠিয়েছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও জনাব তারেক রহমান। আমরা ঘরে ঘরে যাচ্ছি, শহীদদের খবর নিচ্ছি। আজকে শিশু শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর পরিবারের খবর নিতে এবং তাদেরকে সমবেদনা জানাতে এসেছি। সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন আরো বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী- আপনারা সবাই এই শহীদ পরিবারের পাশে থাকবেন। বিএনপি যতদিন থাকবে, ততদিন আমরা এই পরিবারের পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।’
এমন সহমর্মিতার জবাবে শিশু শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর বাবা কবির হোসেন বলেন, ‘আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারসহ সবার নামে আমি মামলা করবো। এমন কি সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধেও আমি মামলা করবো, কারণ তিনি আ’লীগ সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘জাবির ইব্রাহিম দেশের জন্য সম্পূর্ণ রক্ত দিয়ে গেছে, রক্তক্ষরণে সে মারা গেছে। আমি চাই, যখন যে সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকবে, সেই সরকারই আমার সন্তানকে স্মরণ করুক।’
জনাব তারেক রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর বাবা কবির হোসেন বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ ওনার কাছে। তিনি (তারেক রহমান) যেমন আমার পাশে থাকবেন, আমিও ওনার পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।’
শহীদ জাবির ইব্রাহিম-এর বাসভবনে আরো উপস্থিত ছিলেন- সাবেক এমপি ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শাম্মী আক্তার, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোঃ মোকছেদুল মোমিন (মিথুন), সদস্য মাসুদ রানা লিটন, ডেনমার্ক বিএনপি’র সভাপতি গাজী মনির আহমেদ, জার্মানি বিএনপি’র মোস্তাক খান, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য মুসতাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব, রুবেল আমিন, শাকিল হোসেন, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরে রাজধানী ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে ছিল ছোট্ট জাবির। মা-বাবার সঙ্গে রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিল দেখছিল সে। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয় শিশু জাবির ইব্রাহিম।
এদিকে, উত্তরার দক্ষিণখান এলাকায় পশ্চিম মোল্লারটেকে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ জাবির ইব্রাহীম সড়ক’।