কি এক শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ১২৭ রানে ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আশা সবাই ছেড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু বাতি নিভে যাওয়ার আগে ধপ করে সলতেটা যেভাবে জ্বলে ওঠে, বোলার রোহানাত দৌলা বর্ষণের ব্যাট সেভাবেই যেন শেষ মুহূর্তে জ্বলে উঠেছিলো।

কিন্তু শেষটা আর করে আসতে পারলেন না তিনি। রোহানাত অপরাজিতই রয়ে গেলেন। ২৪ বলে ২১ রানের বীরোচিত ইনিংস খেললেন। শেষে যে আর সঙ্গী হিসেবে কাউকে পেলেন না!

মারুফ মৃধা স্ট্রাইকে গিয়েই ভুলটা করলেন। পাকিস্তানি বোলার মোহাম্মদ জিসানের বলটি অফ স্ট্যাম্পের ওপর অনেকটা লাফিয়ে উঠেছিলো। মারুফ মৃধা পেছনের পায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে খেলতে গেলেন। কিন্তু বল ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে গিয়ে আঘাত হানলো স্ট্যাম্পে। বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি।

মাত্র ৫ রান দুরে থাকতেই তরি ডুবলো বাংলাদেশের যুবাদের। রোহানাত দৌলার লড়াইটাকে পুরোপুরি ম্লান করে দিলেন মারুফ মৃধার বোল্ড আউট। ১৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩৫.৫ ওভারে ১৫০ রানেই অলআউট হয়ে গেলো বাংলাদেশ। ৫ রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে পাকিস্তান উঠে গেলো সেমিফাইনালে। সুপার সিক্সে গ্রুপ ‘এ’ থেকে অন্য দল হিসেবে সেমিতে উঠলো ভারত।

প্রথমে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে ১৫৫ রানে অলআউট করে দিয়েছিলো বাংলাদেশের বোলাররা। রোহানাত দৌলা বর্ষণ এবং শেখ পারভেজ জীবন ৪টি করে উইকেট নিয়ে ধ্বস নামান পাকিস্তান ইনিংসে।

সেমিফাইনালে যেতে হলে বাংলাদেশকে জিততে হবে ৩৮.১ ওভারে। তাহলেই পাকিস্তানের চেয়ে স্রেয়তর রানরেটের ব্যবধানে সেমিতে উঠতো টাইগার যুবারা। ৩৫.৫ ওভারে ১৫০ রান করে সেমির পথেই ছিলো বাংলাদেশ; কিন্তু শেষ মুহূর্তে মারুফ মৃধা যদি আরেকটু সাপোর্ট দিতে পারতেন, তাহলে হয়তো রোহানাতের হাতেই জিততে পারতো বাংলাদেশ; কিন্তু তা আর হলো না।

দ্রুত রান তুলতে হবে, এই চাপই ধ্বংস করে দেয় টাইগার ব্যাটিং লাইনআপকে। যাদের ওপর বাংলাদেশের ব্যাটিং নির্ভর করে, সেই আশিকুর রহমান শিবলি, জিশান আলম, আরিফুল ইসলাম কিংবা আহরার আমিনদের কেউই আজ দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তানি বোলারদের সামনে।

মূলতঃ দ্রুত রান তোলার তাড়া থেকেই উইকেট বিলিয়ে দিয়েছে টাইগাররা। সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন মোহাম্মদ শিহাব জেমস। ২০ রান করেন চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১৯ রান করেন জিশান আলম। রোহানাত দৌলা বর্ষণ ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন।

পাকিস্তানি বোলার উবাইদ শাহ একাই নেন ৫ উইকেট। আলি রাজা নেন ৩ উইকেট। ১ উইকেট নেন মোহাম্মদ জিশান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাকিস্তান অ-১৯: ১৫৫/১০, ৪০.৪ ওভার (আরাফাত মিনহাজ ৩৪, শাহজাইব খান ২৬; রোহানাত ৪/২৪, পারভেজ জীবন ৪/২৪)

বাংলাদেশ অ-১৯: ১৫০/১০, ৩৫.৫ ওভার (শিহাব জেমস ২৬, রোহানাত ২১*; উবাইদ শাহ ৫/৪৪)