ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-১১-২৬ ২১:০৮:৫৯




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-১১-২৬ ২১:০৮:৫৯




  • রাজনীতি
  • ‘একতরফা’ নির্বাচন আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে: মান্না.

‘একতরফা’ নির্বাচন আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে: মান্না

‘একতরফা’ নির্বাচন আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে: মান্না


‘একতরফা’ নির্বাচন আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এই হুশিয়ারি দেন।


বেলা ১২টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে বিজয়নগর ও তোপখানা রোডে বিক্ষোভ মিছিল করে। ‘একতরফা তফসিল মানি না, মানব না’, ‘ভোট চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকে। মিছিলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এলে সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন অসুস্থ মাহমুদুর রহমান মান্না।


মান্না বলেন, আমি জানি, তাদের উদ্দেশ্য কী? তারা বলে কোনো রকমে ৭ জানুয়ারি আসলে তো হয়, বিভিন্ন জায়গায় একটা বাক্স বসিয়ে বেড়া-টেরা দিয়ে একটা ঘর দেখাব, তারপর সন্ধ্যার পরে রায় ঘোষণা দেবো। ওটা নির্বাচনই না, ঠেকাব কি? ওই বেড়ার ঘরে আগুন লাগাবার কাজ আমরা করছি না। 


তিনি বলেন, যেইভাবে চেষ্টা করুক, তারা এ নির্বাচন প্রহসনের বাইরে আর কিছু করতে পারবে না। আমরা বলছি, জনগণ প্রত্যাখান করেছে এই নির্বাচন, বিশ্বাবাসী প্রত্যাখান করেছে এই নির্বাচন। তারপরও ওই যে বললাম, আসিতেছে শুভ দিন, দিনগুলো গুনতে থাকেন। দেখেন কি হয়? এ নির্বাচন সরকারের জন্যে, আওয়ামী লীগের জন্যে কোনো নির্বাচন নয়, এটা ওদের নির্বাসনে পাঠাবে। অপেক্ষা করেন।


সরকার পতন আন্দোলনে থাকার একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, একজন বিরাট মোছওয়ালা জেনারেল, এখন এলাকায় যেতে পারেন কিনা সন্দেহ। দেখেন, আসিতেছে শুভ দিন, দিনে দিনে বাড়িয়াছে দেনা, সুধিতে হইবে ঋণ। যারা যা-ই করে পার পাবেন না।


তিনি বলেন, সরকার না বলুক, টিভিতে বলছে, অবরোধ চলছে, দূরপাল্লার কোনো বাস চলছে না। দূরপাল্লার বাসগুলো কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আছে, যাত্রী পাচ্ছে না। এক মাস ধরে মানুষ বিরোধী দলের এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা আছে, আরও থাকবে। আমরা বলি, ওই নির্বাচন যা-ই দেখাক ওরা, লড়াই বন্ধ হবে না, লড়াই চলবে।


মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, চেষ্টা করেছিলো না বিভিন্ন দল ভাঙতে, নতুন নতুন দল করতে। খেয়াল করে দেখেন পাকিস্তান আমলেও কিন্তু রাজাকার পাওয়া গেছে, এবার তো রাজকারও পাওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ এবারে রাজাকার-আলবদরও পায় না। নতুন নতুন কেন্টিডেট দেবে তাও পায় না।


মান্না বলেন, এই যে দেখেন- জোনায়েদ সাকি (গণসংহতি আন্দোলন), উনার দল রেজিস্ট্রেশনের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছিল, নির্বাচন কমিশন দেয়নি। উনি আদালতে গেছেন, আদালত বলেছে- দিয়ে দাও, নির্বাচন কমিশন তাদেরকে দেয়নি। কিন্তু বিএনএম-টিএনএম-এএনএম কত নামের রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে। ওরা বলছে, আমরা তিনশ আসনে প্রার্থী দেবো। প্রেসিডেন্টে-সেক্রেটারির বাইরে তিন নম্বার লোক নাই, ৩-ই যদি না হয় ৩০০ কোত্থেকে হবে।


তিনি বলেন, এখন খালি আওয়ামী লীগ আছে আর কেউ নাই। এখন কি বলছেন, না আমরা এবার জোট করব না, এবার আাওয়ামী লীগ একলা টিকেট দেবো, আওয়ামী লীগ ইলেকশন করবে। নাম বললাম না, অনেক বড় নেতা ছিলেন, অনেক সম্মান করতাম, বাম আন্দোলন করতেন। এখন দালালি করছেন। উনারা আগেই ঘোষণা করেছিলেন আমরা নৌকার টিকেট নিয়ে ইলেকশন করব। বলতে পারেন, তারা কারা?


এখন তারা কি করবেন? এখন তো নৌকা টিকেট দেবে না। এখন দলের মার্কা নিয়ে ইলেকশন করতে পারবেন? চামচাদের এই পরিণতি হয়, দালালদের এই অবস্থা হয়।


বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, একটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস মোকাবিলা করে, ত্রাসের রাজত্ব মোকাবিলা করে দেশব্যাপী অবরোধ চলছে। মাঝে-মধ্যে আমরা বিরতি দেই জনজীবনের কারণের জন্য, বাচ্চাদের পরীক্ষা চলছে, মানুষ যেন স্বস্তির মধ্যে থাকে।


তিনি বলেন, চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য তৈরি হোন। এরা (সরকার) যে তান্ডব তৈরি করেছে দেশব্যাপী সমগ্র আন্দোলন নতুনভাবে আবার ২৮ নভেম্বরের পরে পূণর্গঠিত হচ্ছে। মানুষ জেগে উঠছে, এই সরকার থাকলে দুর্ভিক্ষ অনিবার্য। মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে। গণতন্ত্র মঞ্চ ভোটের অধিকার রক্ষা করবে, মানুষকে রক্ষা করবে, দেশকে রক্ষা করবে।


ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখানে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না, একতরফা নির্বাচন। আমি মনে করি ’১৪, ’১৮ সালের মতো মেহেরবানী করে এক ঝুড়িতে সব ডিম রাখবেন না। ভারতের গণতান্ত্রিক মানুষ, ভারতের কোটি কোটি মানুষ তারা দেখতে চাইবে বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক সরকার, তারা দেখতে চাইবে এখানে অবাধ নিরপেক্ষ বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হচ্ছে।


গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছে, ক্ষমতা আকড়ে আছে। ১/১১ সরকারের রাস্তায় উনারা ধারণ করছেন। ১/১১ সরকার কি করেছিলো? এই দল থেকে ওই দল থেকে লোক ভাগিয়ে এনে কিংস পার্টি বানিয়েছিলো, আর এখন শেখ হাসিনা গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে এই দল থেকে ওই দল থেকে লোক ভাগিয়ে এনে কিংস পার্টি বানাচ্ছেন।


তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন চলবে, আমাদের আন্দোলনকে বিজয় পর্যন্ত নিতে হবে। এখানে কোনো পরাজয়ের সুযোগ নেই। পরাজয় মানে মৃত্যু, পরাজয় মানে এদেশের নাগরিকদের মর্যাদা ভুলণ্ঠিত হওয়া, পরাজয় মানে এদেশের অস্তিত্ব বিলিন হওয়া।


মান্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চলনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ নেতারা বক্তব্য দেন।


গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা দল, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ, লেবার পার্টি প্রভৃতি সংগঠন আলাদা আলাদাভাবে বিজয় নগর, তোপখানা রোড, পান্থ পথে মিছিল করে।


সরকারের পদত্যাগ ও ‘একতরফা’ তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপিসহ সমমনাজোটগুলো রোববার ভোর ৬ থেকে শুরু হওয়া টানা ৪৮ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচি শেষে হবে মঙ্গলবার ভোর ৬টায়। এটি বিএনপি,গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা জোটের সপ্তম অবরোধ কর্মসূচি।









মন্তব্য