ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-০৯-০৩ ০১:২০:৪০




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-০৯-০৩ ০১:২০:৪০




  • রাজনীতি
  • বিএনপি’র সক্রিয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী.

বিএনপি’র সক্রিয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

বিএনপি’র সক্রিয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী


সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। সামনে আন্দোলন আরও জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে দলগুলোর। এমন অবস্থায় রাজপথে সক্রিয় বিএনপি নেতাদের  গ্রেপ্তার ও হয়রানি বেড়েছে। কেউ পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন। আবার কেউ নতুন করে আসামি হচ্ছেন। সক্রিয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

শুধু রাজধানী নয়- এই চিত্র সারাদেশের জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও। তালিকা নিয়ে নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। অনেকে গ্রেপ্তার এড়াতে গ্রামের বাড়ি থেকে অন্য এলাকায় অবস্থান করছেন। এমন অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির দপ্তর সূত্র জানিয়েছে,  গত ২৮শে জুলাই থেকে ২রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৩৩১টি মামলা করা হয়েছে।

এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৩০ জনকে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬৫০ জন নেতাকর্মীকে। গত এক মাসে সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশের হামলায় ১৪৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

পুলিশের বাধার পরও ঝুঁকি নিয়ে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় ছিলেন হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জিকে গউছ। দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে কয়েকদফা  পুলিশের সঙ্গে হবিগঞ্জ বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এসব কর্মসূচিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করেন সাবেক এই ছাত্রনেতা। গত ১৯শে আগস্ট পদযাত্রা কর্মসূচিতে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলায় ২৯শে আগস্ট হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন তিনি। ওইদিন দুপুরে হাইকোর্ট থেকে বের হওয়ার পর কাকরাইল এলাকা থেকে তাকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এরপর সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও সংসদ সদস্য এডভোকেট মো. আবু জাহিরকে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দু’দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। একই মামলায় জামিন পাওয়া মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জি কে গউছ আর আমি একসঙ্গে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হয়েছিলাম। কাকরাইল এলাকা থেকে গউছকে ডিবি পুলিশ আটক করে। এ সময় তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন কর্মী ছিলেন। কিন্তু তাদের ছেড়ে দিয়ে শুধু গউছকে নিয়ে যায় তারা।

ঢাকার প্রবেশমুখ মাতুয়াইলে অবস্থান কর্মসূচি পালনে জোরালো ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। ওই ঘটনায় ১৯শে আগস্ট রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল থেকে রবিনকে তুলে নিয়ে পরদিন গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এর আগে রবিনের পিতা বিএনপি’র বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক  ও সাবেক এমপি মো. সালাহউদ্দিন আহমেদসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে রাজধানীতে দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন ঢাবি শাখা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান। গত ১৯শে আগস্ট তাকে সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর ছাত্রদলের ছয় নেতাকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন তাদের তিনটি পুরনো পিস্তল ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাদের রিমান্ডে দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।  

ওদিকে বিএনপি নেতা আবদুল গাফফার অভিযোগ করেন, গত সপ্তাহে বিনা ওয়ারেন্টে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী ইউনিয়ন বিএনপি’র ২৭ জনের তালিকা নিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা জাহেদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিদিন ওই ইউনিয়নের বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে অনেক নেতাকর্মী এলাকাছাড়া। ওদিকে মুরাদনগর, সাতক্ষীরা উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালানোর অভিযোগ করেছে দলটি।  

এ বিষয়ে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই অবৈধ সরকারের জনসমর্থন নেই। তাদের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছে- যেকোনো সময় জনগণের অভ্যুত্থান হতে পারে। এই ভয় থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশে বেছে বেছে আন্দোলনে সক্রিয় নেতাদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে।  

জেলায় জেলায় গ্রেপ্তার

এদিকে ২৯শে আগস্ট রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল থেকে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল আহমেদ চৌধুরী, জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর টিপু আহমেদ  এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মিল্লাদ হোসেনকে সাদা পোশাকের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়াও ওইদিন ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন হোসাইনকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২৫শে আগস্ট নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদল নেতা মো. নাছির উদ্দিন সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়া ৪২ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক শিশির আহমেদ, ২৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. ময়নাল, চুনারুঘাট ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সারোয়ার হোসেন সুমন ও শান্তিনগর বাজার ইউনিট বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আলম স্বপন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

গত ২৫শে আগস্ট রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, সোনারগাঁ থানার জামপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি লতিফ মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। 

একইদিন চট্টগ্রাম উত্তর জেলাধীন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাকসুদুল হক চৌধুরী, বেতাগী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সদস্য সচিব সুরুজ্জামান সুরুজকে গ্রেপ্তার করা হয়।  এ ছাড়া ২২শে আগস্ট মোংলার শ্রমিক দলের সাবেক সহ-সভাপতি শহীদ মো. আব্দুল বাতেনের ছেলে মো. সোহাগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মালেকুল ইসলাম ও শিবগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. হাসিবুর রহমান, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক ছলিম উল্লাহ ও সহ-সভাপতি মো. আব্দুল হাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ২৩শে আগস্ট ময়মনসিংহ  দক্ষিণ জেলার ৩নং কুশমাইল ইউনিয়ন বিএনপি নেতা- মো. মোবারক আলী, মোহাম্মদ আলী, ৪ নং বালিয়ান ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. কবির ও ১১ নং রাধাকানাই ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. আব্দুল মতিন, পাগলা থানার বিএনপি নেতা মমতাজ উদ্দিন, আব্দুল কাদির, যুবদল নেতা চন্দন সরকার, ফুলপুর পৌর মৎস্যজীবী দল নেতা-আবু হেনজেল ও মো. আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়াও ভালুকা উপজেলা যুবদল নেতা শাহিনুজ্জামান সমর পাঠান, ৮ নং ডাকাতিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি শামসুল হক মেম্বার ও ৩ নং ভরাডোবা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহিদ হাসানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে। এ ছাড়া পিরোজপুরে মহিউদ্দীন মল্লিক নাছির, সোনারগাঁয়ের ইব্রাহিম, মো. সুরুজ মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম সর্দার, রূপগঞ্জের সুমন, নাদিম, আয়লান, পিন্টু, স্বপন, বিষু, পারভেজ ও সাজ্জাত,  হবিগঞ্জের সালাউদ্দিন ফয়সাল, আজমিরীগঞ্জের ফখরুল, ওমর ফরুক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সোহাগ, শফিকুল ইসলাম স্বপন, মো. মনির হোসেন, ইসমাইল হোসেন,  পাগলা থানার বিএনপি নেতা- ফরিদ খান, যুবদল নেতা ফারুক খান ও ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ খান,  ভালুকার সাখাওয়াত, দুলাল, উজ্জ্বল মিয়া এবং মুক্তাগাছার মো. ইদ্রিস আলী, মো. রফিকুল ইসলাম, বিপ্লব, হুমায়ন কবির, গৌরিপুর উপজেলা বিএনপি নেতা মনির খান, মালেক মেম্বার, ঈশ্বরদীর যুবদল নেতা খায়রুল আলম, আবুল কালাম, তারেকুল ইসলাম, মুরাদনগরের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সরোয়ার, সবুর খান, এমরান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আনোয়ার হোসেন, মোল্লারহাটের জাহিদ মিয়া, ফকিরহাটের মনি মেম্বার, সেলিম মল্লিক, সাদ্দাম মোল্লা, কামরুল, সাটুরিয়ার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মহসিন, আশুগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আতাউর রহমান, সলঙ্গার আব্দুল আলীম, রূপনগরের কাউছার হামিদ,  সোনারগাঁয়ের মজিবুর রহমান, আকবর মিয়া, বারদীর মুছা মেম্বার, স্বাধীন রহমান, ওয়ারী বিএনপি’র টমাস, গেণ্ডারিয়ার সোহাগ, শ্রীনগরের এমদাদুল, দিপু খান, মাহবুব খান, মহিতুল, আশরাফুল শুভ, কোতোয়ালি বিএনপি’র বেনজির আহম্মেদ, বংশাল বিএনপি’র দীপু,  ঝিনাইদহ সদর থানার ছাত্রদলের রনক, পপ্পু, পিন্টু, সৌমেন, মানিক, মনিরুল, বখতিয়ার, সোহাগ, নয়ন, ইমরান, বাদশা, মোজাম্মেল, মাসুম, রুহুল কিছলু ও রেজাউল, মাগুরা জেলা ছাত্রদলের আরিফুল, বিএনপি’র শরিফুজ্জামান, বাবলু, শ্রমিক দল নেতা মহর আলী বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন বিশ্বাস, যুবদল নেতা মন্টু, রবিউল, জিয়া, তুহিন, নুরুল, আয়ুব আলী, ও কুদ্দুস, পল্টন থানা ছাত্রদলের ইয়াহিয়া নোমান, নবীনগর পৌর যুবদলের অনিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে বিএনপি’র প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল  মোনায়েম মুন্না, মিয়া নুরুদ্দিন অপু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন, ইউসুব বিন জলিল, আলী আকবর চুন্নু, আজিজির রহমান মুছাব্বির ও সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।  









মন্তব্য