ডেইলি বাংলা টাইমস :
প্রকাশিত : ২০২৩-১২-১৬ ১৯:১৭:৫৪
র্যালিতে নেতাকর্মীর ঢল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বিজয় হয়েছিল গণতন্ত্রের। সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করে বিজয় দিবসকে আজ বর্তমান সরকার পরাজয় দিবসে পরিণত করেছে।’
বর্তমান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘সাহস থাকলে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।’
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীতে শোভাযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বেলা ২টা ১৯ মিনিটে বিজয় শোভাযাত্রা শুরু হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি যৌথভাবে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে।শোভাযাত্রায় বিএনপির নেতাকর্মীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও জাতীয় পতাকা হাতে র্যালিতে অংশ নেন। র্যালিটি কাকরাইল মোড় ঘুরে শান্তিনগরে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ডিএমপি ইতোমধ্যে শোভাযাত্রার মৌখিক অনুমতি দিয়েছে বিএনপিকে।
মঈন খান বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ করেছিলাম। ওই বিজয় দিবসকে সরকার পরাজয় দিবসে পরিণত করেছে। আজও দেশে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে প্রতিবাদী মানুষকে জেলে পুরে রেখেছে এই সরকার। এভাবে তারা বিজয় দিবসকে পরাজয় দিবসে পরিণত করেছে। সরকারের সৎ সাহস থাকলে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। যেমনটি ১৯৯৬ সালে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের লক্ষ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে সরকার নাকি দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে। তাহলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তবেই দেখা যাবে জনগণের কাছে কে জনপ্রিয়? এখন যেভাবে নির্বাচনের সিট ভাগাভাগি চলছে তাকে নির্বাচন বলে না। এটা পৃথিবীর কোথাও নেই। বিশ্বের কোথাও ভোট চুরি করে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না। জনগণের কল্যাণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে বিএনপি। আসুন আমরা সবাই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘একটা অমানবিক সরকার জোর করে আজ ক্ষমতায়, যারা অসুস্থ খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করতে করতে দিচ্ছে না। আজকে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা কারারুদ্ধ, দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই নির্বাচন করার দরকার নাই, বর্তমান সরকার ঘোষণা দিলেই হয়, তাদের টাকা পয়সা নষ্ট করার দরকার নেই। আমরা এই নির্বাচন মানি না, মানাব না। এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার লড়াই দাবি আদায় পর্যন্ত চলবে।’
র্যালিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, কামরুজ্জামান রতন, তাইফুল ইসলাম টিপু, কাদের গণি চৌধুরী, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, হাসান মামুন, অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, প্রকৌশলী মাহবুব আলম।
এছাড়াও র্যালিতে জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ ইকবাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব এজিএম শামসুল হক, যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আখতার হোসেন, মোস্তফা জামান, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য এডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার, সোহেল রহমান, এ্যাড. আক্তারুজ্জামান, কাউন্সিলর আলী আকবর আলী, আলাউদ্দিন সরকার টিপু, আকবর হোসেন নান্টু ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলাদলের সদস্য সচিব এডভোকেট রুনা লায়লা, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাএদলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হাসান রাজ, মিরপুর থানা বিএনপির আহবায়ক আবুল বাশার ভূইয়া, যুগ্ম আহবায়ক শ ম আরিফ উল্লাহ, সিদ্দির আহমেদ সবুজ ও ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আফজাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল মহানগর উত্তরের মিরপুর থানার আহবায়ক ফিরোজ আহম্মেদ ও ১২ নং ওয়ার্ডের আহবায়ক রাজিব আহম্মেদ রাজ, সবুজবাগ থানা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল রহিম, দক্ষিণখান থানা বিএনপির আহবায়ক মোতালেব হোসেন রতন ও যুগ্ম আহবায়ক দেওয়ান মোঃ নাজিম উদ্দীন, বিমানবন্দর থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন খোকন ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আজমল হুদা মিঠু, আদাবর থানা বিএনপির আহবায়ক নাসির উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ হানিফ, মাসুম বাবুল, মোহাম্মদপুরথানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এস আহমাদ আলী ও ৩৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মাসুম খান রাজেশ ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান রেজা, ওয়ারী থানা বিএনপির ৩৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান মনা ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক শহিদসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষকদল, মৎস্যজীবী দল, শ্রমিক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন।
বিএনপির বিজয় র্যালিকে ঘিরে নয়াপল্টনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ নয়াপল্টনের বিভিন্ন অলি-গলিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকেও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে।
র্যালিতে নেতাকর্মীর ঢল
ফকিরেরপুল বাজার থেকে শুরু করে নাইটেঙ্গল রেঁস্তোরা মোড়পর্যন্ত নয়া পল্টনের সড়কে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি বিজয় র্যালি একটা বড় সমাবেশে রূপ নেয়। ঢাকা মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনের সড়কে সমবেত হয়। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল নেতাকর্মীদের হাতে।
এর আগে, সাড়ে ১১টা থেকে নয়াপল্টনের সড়কের একদিকের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে পুলিশ। নয়াপল্টন থেকে শুরু করে মালিবাগ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।]