ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-১১-২১ ০০:২৭:৫৮




ডেইলি বাংলা টাইমস :


প্রকাশিত : ২০২৩-১১-২১ ০০:২৭:৫৮




  • আইন-আদালত
  • শীর্ষ নেতাসহ একদিনে বিএনপি’র ১৩৬ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড.

শীর্ষ নেতাসহ একদিনে বিএনপি’র ১৩৬ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড

শীর্ষ নেতাসহ একদিনে বিএনপি’র ১৩৬ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড


একদিনে রাজধানীর ছয় থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলায়  বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা সাইফুল আলম নিরব, বিএনপি’র তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ১৩৬ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি অর্থদণ্ড অনাদায়ে কারাভোগের আদেশ দিয়েছেন। তাদের আইনজীবীদের দাবি, এসব মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের কেউ জড়িত নন। অন্যায়ভাবে তাদের কারাদণ্ড দিচ্ছেন আদালত। আসামিরা আইনি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে ইচ্ছামতো মামলায় রায় দিচ্ছেন আদালত। এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আদালত বিএনপি’র মামলাগুলো দ্রুত রায় দিতে অবশ্বিাস্য দ্রুত গতিতে মামলার তারিখ দিচ্ছেন। অফিস সময়সূচির পরেও মামলার শুনানি করা হয়। অথচ সংশ্লিষ্ট কোর্টে একযুগ আগের মামলাও পড়ে আছে। শুনানি হচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা সাক্ষী দিতে এসেও ফিরে যাচ্ছেন। 

বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এসব মামলাকে ভিত্তিহীন রাজনৈতিক মামলা বলে আখ্যায়িত করেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক মামলাগুলো তড়িঘড়ি করে একের পর এক রায় দেয়া হচ্ছে। মূলত সরকারবিরোধী নেতা-কর্মী তথা যারা বিএনপি’র এমপি ছিলেন বা ভবিষ্যৎ এমপি ইলেকশন করবেন তাদের টার্গেট করে রায় দেয়া হচ্ছে। দেশকে বিরোধী দলশূন্য করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত এই সরকার। অথচ সাগর-রুনির মামলার চার্জশিট এই পর্যন্ত ১০৩ বার পিছিয়েছে। শুধু তাই নয়, অনেক চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর কোন বিচার হচ্ছে না। তিনি বলেন, মামলার কার্যক্রমে লিগ্যাল প্রসিডিউর ফলো করা হচ্ছে না। যেনতেনভাবে রায়  ঘোষণা করা হচ্ছে। মূলত বিচারের নামে অবিচার করছে। 

নিউমার্কেট থানার মামলায় হাবিব-উন-নবী সোহেলসহ বিএনপি’র ১৪ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড: পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার ঘটনায় রাজধানীর নিউমার্কেট থানার মামলায় বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ ১৪ জনকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দণ্ডবিধির ১৪৩ ধারায় আসামিদের ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে এবং দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও দুই মাসের কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের বিএনপি’র হরতাল-অবরোধ চলাকালে নিউমার্কেটের ৪নং গেটে পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করেন আসামিরা। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন তারা। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে সোহেলসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এরপর দণ্ডবিধি ১৪৩ ও ৩২৩ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত পাঁচ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

তেজগাঁও থানার মামলায় বিএনপি নেতা নীরবসহ ৭ জনের কারাদণ্ড: দশ বছর আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা সাইফুল আলম নীরবসহ দলটির সাত নেতাকর্মীর ২ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও সাত মাস কারাভোগের আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- সাজেদুল ইসলাম সুমন, গাণ্ডু শাহীন, বেল্লাল হোসেন, জাকির হোসেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও আবু বক্কর সিদ্দিক। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। এদিন রায় ঘোষণার আগে কারাগার থেকে নীরবকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। অপর ছয় আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা-পরোয়ানাহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আসামিপক্ষের আইনজীবী শেখ শাকিল আহমেদ রিপন বলেন,  তেজগাঁও থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা সাইফুল আলম নীরবসহ দলটির সাত নেতাকর্মীর ২ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের মে মাসে বিএনপি’র হরতাল-অবরোধ চলাকালে তেজগাঁও থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে পুলিশ। মামলার পর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৩৫ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

পল্টন থানার মামলায় যুবদল সভাপতি টুকুসহ বিএনপি’র ২৫ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড: পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিএনপি’র ২৫ নেতাকর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও একমাস করে কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপি’র তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব হাবিব- উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি আকরামুল হাসান মিন্টু, হাবিবুর রশিদ হাবিব ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি এনামুল হক এনাম। 

বংশাল থানার মামলায় বিএনপি’র ৬২ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড: ২০১৮ সালের রাজধানীর বংশালে পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার মামলায় বিএনপি’র সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খন্দকার আখতার হামিদ খান পবনসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের ৬২ নেতাকর্মীকে সাড়ে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী আসামিদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। আসামিরা অনুপস্থিত থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, রাজধানীর বংশালে পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার মামলায় বিএনপি’র সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খন্দকার আখতার হামিদ খান পবনসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের ৬২ নেতাকর্মীকে সাড়ে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বংশালের নবাব কাটরায় হোটেল সুফিয়া (প্রাইভেট) লিমিটেডের সামনে বিএনপি’র একদল নেতাকর্মী জড়ো হন। এক পর্যায়ে তারা দোকানপাট ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বংশাল থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৮০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই ৬২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালের ১৪ই মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

এছাড়া চকবাজার থানার একটি মামলায় ১৫ এবং শাহজাহানপুর থানার আরেকটি মামলায় ১৩ জনকে কারাদণ্ড দেন আদালত।









মন্তব্য